আমাদের এই বাংলায় প্রচুর চিত্রশিল্পী ও ভাস্কর। বাংলার চিত্রকলার ইতিহাস দীর্ঘ একহাজার বছরেরও বেশি পুরোনো। স্বভাবতই এইবিষয়ে আলোচনা ও লেখালিখিও কম হয়নি। ছবি-ভাস্কর্য নিয়ে এইসব লেখাপত্রের ইতিহাস বিষয়ে একটু খোঁজখবর করতে গিয়ে বিস্ময়ে চোখ কপালে উঠে গেল। বাংলায় শিল্পের প্রথম বই লিখেছিলেন শ্যামাচরণ শ্রীমানী, তাঁর লেখা বইটির নাম ছিল আর্যজাতির শিল্পচাতুরী। সে হল উনিশ শতকের কথা। তারপর এদেশে যে কত শত বই প্রকাশিত হয়েছে তা গুণে বলা খুব শক্ত। আমার অসম্পূর্ণ হিসেবে এই সংখ্যা অন্তত দু’শো-আশি। কিন্তু বইয়ের বাইরে পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত লেখার সন্ধান যদি করি, তাহলে দেখা যাবে তার সংখ্যা দেড়হাজারেরও বেশি। ভাবা যায়! ১৯১৩ থেকে ২০০৮-এর মধ্যে প্রকাশিত শিল্পকলা বিষয়ক উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধের সংখ্যা ১৩৬৮ । পত্রিকাগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ছবিভাস্কর্য নিয়ে লেখা ছেপেছে দেশ (৩০৫টি )। এছাড়াও প্রবাসী, বিশ্বভারতী, এক্ষণ, সুন্দরম ইত্যাদি পত্রিকার অবদানও কম নয়। এছাড়া রয়েছে রোদে ধান ছায়ায় পান, চিত্রকল্পকথা-র মতো লিটল ম্যাগাজিন, যাদের ভিত্তিই হল ছবিভাস্কর্য।
এখন কথা হল, এত যে প্রয়াস, এত যে প্রবন্ধ-নিবন্ধ-সাক্ষাৎকারের তুমুল আয়োজন তবুও এ পোড়া দেশে শিল্পের দর্শক নেই কেন? আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পীদের দেশে দর্শকদের এই দুর্দশা দেখে গা জ্বলে যায়। আমরা কি নিয়ে গর্ব করবো সেটাই তো জানি না।